সাফ কবলা হল বাংলাদেশের ভূমি আইন অনুযায়ী সম্পত্তি হস্তান্তরের একটি পদ্ধতি। এটি একটি বিক্রয় দলিল, যার মাধ্যমে বিক্রেতা ক্রেতার কাছে সম্পূর্ণ স্বত্ব ও অধিকার হস্তান্তর করে এবং ভবিষ্যতে কোনো দাবি বা অধিকার রাখে না। অর্থাৎ, সাফ কবলা দলিলের মাধ্যমে জমির মালিকানা স্থায়ীভাবে পরিবর্তন হয়, এবং বিক্রেতার বা তার উত্তরাধিকারীদের সেই সম্পত্তির ওপর আর কোনো দাবির সুযোগ থাকে না।
সাফ কবলা দলিলের বৈশিষ্ট্য:
- পূর্ণ মালিকানা হস্তান্তর: বিক্রেতা জমির সব অধিকার চূড়ান্তভাবে ক্রেতার কাছে হস্তান্তর করে।
- কোনো শর্ত থাকে না: এই দলিলে ভবিষ্যতে কোনো শর্ত বা দাবির সুযোগ থাকে না।
- আইনি বৈধতা: এটি একটি বৈধ দলিল হিসেবে রেজিস্ট্রি করতে হয়।
- ফিরিয়ে নেওয়ার সুযোগ নেই: একবার দলিল সম্পাদিত হলে, বিক্রেতা তা ফেরত নিতে পারে না।
সাফ কবলা দলিল করতে যা যা দরকার:
- বিক্রেতা ও ক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্র
- মৌজা ম্যাপ ও জমির খতিয়ান
- জমির দাগ ও পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্য
- স্ট্যাম্প শুল্ক ও রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধ
সাফ কবলা দলিলের রেজিস্ট্র খরচঃ
সাফ কবলা দলিলের রেজিস্ট্রেশন খরচ মূলত দলিলে উল্লেখিত সম্পত্তির মূল্যের উপর নির্ভর করে। সাধারণত নিম্নোক্ত ফি ও শুল্ক প্রযোজ্য:
রেজিস্ট্রেশন ফি: দলিলে উল্লেখিত সম্পত্তির মূল্যের ১%। উদাহরণস্বরূপ, যদি সম্পত্তির মূল্য ১০,০০,০০০ টাকা হয়, তবে রেজিস্ট্রেশন ফি হবে ১০,০০০ টাকা।
স্ট্যাম্প শুল্ক: দলিলে উল্লেখিত সম্পত্তির মূল্যের ১.৫%। অর্থাৎ, ১০,০০,০০০ টাকার সম্পত্তির ক্ষেত্রে স্ট্যাম্প শুল্ক হবে ১৫,০০০ টাকা।
হলফনামা: ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা তৈরি করে দলিলের সাথে সংযুক্ত করতে হয়।
ই-ফি: ১০০ টাকা।
এন-ফি: প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা তার অংশের জন্য ২৪ টাকা।
এনএন-ফি (নকলনবিশদের পারিশ্রমিক): প্রতি ৩০০ শব্দ বিশিষ্ট এক পৃষ্ঠা বা তার অংশের জন্য ৩৬ টাকা।
উপরোক্ত ফি ও শুল্কের পাশাপাশি, দলিলের মূল্য ২৪,০০০ টাকার বেশি হলে রেজিস্ট্রেশন ফি এবং স্ট্যাম্প শুল্ক পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানীয় সোনালী ব্যাংকে জমা দিতে হবে।
উল্লেখ্য, এই তথ্যসমূহ সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে। তাই সর্বশেষ তথ্যের জন্য স্থানীয় সাব-রেজিস্ট্রার অফিস বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
0 Comments